স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত আব্দুল মান্নানের মরদেহ দাফনের ৩ মাস ২১ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার সকালে সদর উপজেলার এরুলিয়া বানদিঘী পূর্বপাড়া কবর স্থান থেকে মরদেহ উত্তোলন করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলন কাজে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিয়ান মুনসীফ। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বগুড়ার গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আরিফুল ইসলামসহ পুলিশ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিয়ান মুনসীফ বলেন, আদালতের নির্দেশে আব্দুল মান্নানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে যথাযথ মর্যাদায় আবারও মরদেহ দাফন করা হবে।
নিহত আবদুল মান্নানের বাড়ি বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া ইউনিয়নের বানদীঘি পূর্বপাড়া গ্রামে। তিনি রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ৪ আগস্ট মারা যাওয়ার পর ১১ সেপ্টেম্বর বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ছেলে রানা হামিদ। মামলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট বেলা একটার দিকে বগুড়া শহরের প্রধান সড়কে বড়গোলা ট্রাফিক মোড় এলাকায় আন্দোলন চলাকালে রিভলবার, পিস্তল, বন্দুক, আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল ও দেশি অস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় ককটেল ও পেট্রলবোমা হামলাও করা হয়। পিস্তলের গুলি রিকশাচালক আবদুল মান্নানের হৃৎপিণ্ডে বিদ্ধ হয়। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় ছাত্র-জনতা হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে তাঁরা চলে যান।
পরে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ আবদুল মান্নানকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
বগুড়া কোর্ট পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন জানান, আব্দুল মান্নান হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণের জন্য ২৮ অক্টোবর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনে বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলি আদালতে আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুকান্ত সাহা গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) আবেদন মঞ্জুর করেন।