Monday, December 23, 2024
Homeউত্তরের খবরনবান্ন উৎসব উপলক্ষে বগুড়ায় মাছের মেলায় কোটি টাকার বেচাকেনা

নবান্ন উৎসব উপলক্ষে বগুড়ায় মাছের মেলায় কোটি টাকার বেচাকেনা

স্টাফ রিপোর্টার: নবান্ন উৎসব উপলক্ষে বগুড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে বসেছে মাছের মেলা। কাকডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মাছের মেলা বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের পদচারনায় মুখরিত। মেলায় বোয়াল, রুই, কাতলা, চিতল, ব্লাক কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। মাছ ছাড়াও নতুন আলুসহ সবজি ও মিষ্টান্নসহ শিশুদের খেলনার দোকানগুলোতে দিনব্যাপি কয়েক কোটি টাকার কেনাবেচা হয় মেলা উপলক্ষে।

জানা গেছে, নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করেই প্রতিবছর মাছের মেলা বসে শিবগঞ্জের উথলী গ্রামের বটতলায়। আড়াইশো বছরের প্রাচীন এ মেলা। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে এ মেলা। রবিবার সকাল থেকেই বগুড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতা বিক্রেতারা বড় মাছ কেনার জন্য মেলায় ভিড় জমিয়েছেন। নবান্ন উৎসব ঘিরে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান, মোকামতলা, উথলী গ্রামে বসেছে মেলা। এ উপলক্ষে আশেপাশের অর্ধশত গ্রামে উৎসবের আমেজ।

সরেজমিন দেখা যায়, সকালে শিবগঞ্জের উথলী গ্রামের বটতলায় শতাধিক দোকানে ১ কেজি থেকে শুরু করে ১৭ কেজি ওজনের বিভিন্ন জাতের মাছ দেখা গেছে। ১৭ কেজি ওজনের ব্লাক কার্প, ১১ কেজি ওজনের কাতল, ৭ কেজি রুই, ৪ কেজি কাকলে, ব্রিগহেড, বাগার, সিলভার কার্প, চিতল, বোয়াল সহ হরেক রকমের মাছ বিক্রি হয়েছে এই মেলায়।

বিশালাকৃতির রুই-কাতলা ও মাছগুলো ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা, চিতল ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও মাঝারি আকারের মাছ ২৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ৪৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা দরে ব্ল্যাককাপ, ব্রিগহেড ও সিলভার কার্প মাছ বেচাকেনা হয়। প্রাচীন উথলী মাছের মেলাকে কেন্দ্র করে আশেপাশের ২২ গ্রামে স্বজনদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

নবান্ন উপলক্ষে সেখানে মাছের মেলা বসলেও জমি থেকে নতুন তোলা অন্যান্য শাক-সবজির পসরাও সাজানো হয় মেলা চত্বরে। এই মেলায় নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়াও মিষ্টি আলু প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ৫শ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
শিবগঞ্জের মোকামতলা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মানিক মিয়া বলেন, তিনি এবার মেলায় ১৭ কেজি ওজনের ব্লাক কার্প ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন।

বগুড়া শহরের মাছ ব্যবসায়ী আবু সাঈদ জানান, তারা প্রতিবছর এ মেলার জন্য অপেক্ষা করেন। এ মেলায় বড় বড় আকারের মাছ বিক্রি হয়ে থাকে। দামও বেশ ভালো পাওয়া যায়।
মেলায় আসা দর্শনার্থী আবুল কালাম, শামীম মিয়া জানান, প্রতিবছর তারা এ মেলায় আসেন। এলাকায় আত্মীয়স্বজনসহ জামাইরা আসেন বাড়ী বাড়ী। সব বাড়ীতে উৎসবমূখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

শিবগঞ্জের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিশিকান্ত সরকার জানান, বৃটিশ আমল থেকে এ মেলা বসে। নবান্ন উপলক্ষে মেলা হলেও এটি হিন্দু মুসলিমদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।

শিবগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মীর শাহে আলম বলেন, ঐত্যিহবাহী এ মেলা উপলক্ষে গোটা শিবগঞ্জের ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ। উথলিসহ আশেরপাশের গ্রামে জামাইসহ অতিথিরা আসেন।

এদিকে জেলার মহাস্থান, নন্দীগ্রাম, সহ বিভিন্ন স্থানে বসেছে মাছের মেলা। মেলায় নতুন আলু সহ শাক-সবজি, মিষ্টান্ন, দই, মাটির তৈরী খেলার দোকানও সহ বিভিন্ন পন্যর পসরাও সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। কয়েক কোটি টাকার বেচাকেনা হয় মেলায়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments