স্টাফ রিপোর্টার: ‘আমি আর আমার সন্তান মরে যায়া জন্য কেউ দায়ি নই’ আমি আমার সন্তানকে আমি মেরে ফেলেছি’ এভাবেই সন্তানকে হত্যার দায় নিয়ে চিরকুট লিখে চিরবিদায় নিয়েছেন জুলেখা বেগম। চারবছরের শিশু সন্তান মুশফিকা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যার পর গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ ধারনা করছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কাহালুর ডেপোইল এলাকায় এঘটনা ঘটে।
পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেছে। নিহতরা হলেন ওই এলাকার অটোচালক আব্দুল মমিনের স্ত্রী জুলেখা বেগম (২৪) এবং তাদের সন্তান মুশফিকা খাতুন। এসময় মরদেহের পাশে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ।এঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে থানায়, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, কাহালু উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়নের ডেপোইল পূর্বপাড়া গ্রামের অটোভ্যান চালক আব্দুল মমিন প্রতিদিনের ন্যায় সকালে ভাত খেয়ে স্ত্রী জুলেখা বেগম ও সন্তান মুশফিকাকে রেখে বাড়ী থেকে কর্মের জন্য বাহিরে যান। জুলেখার শ্বশুর আবু বকর দুপুরে নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদ যান, সেখান থেকে ফিরে জুলেখার কাছে ভাত দেয়ার জন্য ডাকাডাকি করেন।
এসময় দরজা বন্ধ ও তার কোন সাড়া না পেয়ে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখেন জুলেখা তীরের সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঝুলছে আর নাতনী মুশফিকা বিছানায় পড়ে আছে। এসময় পুলিশকে খবর দিলে বেলা ৩ টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে।
সহকারী পুলিশ সুপার ওমর আলী, কাহালু থানার ওসি শাহীনুজ্জামানসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, করোনাকালের আগে একই ইউনিয়নের বাঘোপাড়া গ্রামের লিটন খলিফার মেয়ের সাথে মমিনের বিয়ে হয়। বিবাহিত জীবনে তাদের সংসারে চার বছরের কন্যা মুশফিকা।
পারিবারিক কোন কলহ ছিলনা তাদের বলে স্থানীয়রা জানান। এদিকে ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করে দুই পরিবারের স্বজনদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে এসময়।
কাহালু থানার ওসি শাহীনুজ্জামান জানান, শিশু মুশফিকাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর জুলেখা বেগম আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে। এসময় একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ যাতে মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করা হয়নি। মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আত্মহত্যার ঘটনায় একটি ও মুশফিকাকে হত্যার ঘটনায় তার নানা লিটন খলিফা কাহালু থানায় মামলা দায়ের করেছেন।