ডেস্ক রিপোর্ট : জুলাই গণহত্যার অভিযোগে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের ধরতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ‘রেড নোটিশ’ জারি করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কার কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে গিয়ে একথা বলেন।
উল্লেখ্য বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্যে দিয়ে টানা পৌনে ষোল বছরের আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনের পতন হয়।
তিনি বলেন, বিশ্ব জনমতকে বিভ্রান্ত করতে নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে।
এসময় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) দেয়া আওয়ামী লীগের অভিযোগ সরকার আমলে নিচ্ছে না জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করতেই সরকারের বিরুদ্ধে আইসিসিতে অভিযোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অভিযোগটি কোনোভাবেই গৃহীত হওয়ার কারণ নেই।
ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, এটা কোনো মামলা না, এটা আইসিসির প্রসিকিউশন অফিসকে একটা পিটিশন লিখে জানানো। এটা পৃথিবীর যে কোনো মানুষ করতে পারে। এটা এতই অবিশ্বাস্য ও বস্তুনিষ্টতাহীন একটা মামলা যে কোনোভাবেই এই রিট হওয়ার কোনো কারণ নাই। এটা ফ্যাসিস্টচক্র বিশ্ব জনমতকে এবং বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ও আত্মরক্ষার জন্য মিথ্যা প্রচারণার চালানোর উপায় হিসেবে করেছে।
এই বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছেন, সরকারের নির্দেশনা পেলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কার কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। আজ সরেজমিন দেখা যায়, ট্রাইব্যুনালের ঐতিহাসিক সাদা ভবনটির (পুরাতন হাইকোর্ট ভবন) নানামুখী সংস্কার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন বিভিন্ন মিস্ত্রি তাদের কর্মীরা। এছাড়া ট্র্যাইব্যুনাল সংলগ্ন বাগান নতুন ভাবে সাজানো হচ্ছে।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে এই সংস্কার কাজের সার্বিক তদারকি করা হচ্ছে। যেখানে কয়েকশ’ কর্মী এখন নিয়মিত কাজ করছেন।
গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আর ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে চিফ প্রসিকিউটরসহ প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা নিয়োগ দেয়া হয়।