Monday, December 23, 2024
Homeজাতীয়পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ পুনরুদ্ধারে সিঙ্গাপুরের সহায়তা চান প্রধান উপদেষ্টা

পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ পুনরুদ্ধারে সিঙ্গাপুরের সহায়তা চান প্রধান উপদেষ্টা

ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ পুনরুদ্ধার এবং অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য অভিবাসন ব্যয় কমাতে সহায়তা প্রদানের জন্য সিঙ্গাপুরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লো সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ একথা বলেন।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস রাষ্ট্রদূত লো’কে বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করা হয়েছে। এগুলো ফেরত আনতে আমাদের’ সিঙ্গাপুরের পূর্ণ সহযোগিতার প্রয়োজন।
রাষ্ট্রদূত লো প্রধান উপদেষ্টাকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব ও মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং ঢাকায় সিঙ্গাপুরের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মাইকেল লি।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর লক্ষ্যে ঢাকার সঙ্গে কাজ করার জন্যও সিঙ্গাপুরের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি জানান, প্রবাসীরা যেন তাদের পরিবারের কাছে আরও বেশি অর্থ পাঠাতে পারে সে লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার অভিবাসনের ব্যয় কমিয়ে আনতে চায়।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে নিয়োগের খরচ কমানোর জন্য একটি মডেল কাঠামো তৈরি করতে পারি।’

হাইকমিশনার এ বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখান। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরও নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে অবৈধ অর্থ আদান-প্রদান রোধ করতে আগ্রহী।

রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশকে বৈদেশিক নিয়োগ ব্যবস্থা ডিজিটালাইজ করার পরামর্শ দেন যাতে করে মানব পাচার ও শ্রমিক শোষণের আশঙ্কা কমে যায়।

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা ও হাইকমিশনার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা, অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রনীতি, শিপিং, শিক্ষা ও নিজ নিজ জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিয়েও আলোচনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, স্বৈরাচারী সরকার পতনের মাত্র তিন মাসের মাথায় অর্থনীতি ভালোভাবে পুনরুদ্ধার করে বাংলাদেশ এখন ব্যবসার জন্য প্রস্তুত। এখন এদেশে ব্যবসা করার উপযুক্ত সময়।

সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ডিরেক্টর ফ্রান্সিস চং বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব করেছিল। প্রস্তাবিত এফটিএ’র ওপর একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং উভয় দেশই এখন কীভাবে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরু করা যায় তার সুযোগ নির্ধারণ করবে।

লো বলেন, সিঙ্গাপুর পানি শোধন এবং বর্জ্য শক্তি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তাদের দক্ষতা ভাগাভাগি করতে পারলে খুশি হবে। তিনি উভয় দেশের খাদ্য সংস্থার মধ্যে সহযোগিতার প্রস্তাব করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রনীতি প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার সরকার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখছে এবং সার্ককে দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে আরও ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে।

তিনি আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির জন্য সিঙ্গাপুরের সমর্থন চান। প্রতিক্রিয়ায় ডেরেক লো এ ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ঢাকা তার পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের মিত্রদের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে।‘আমরা পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমাদের সর্বত্র বন্ধুত্ব করতে হবে,’ অধ্যাপক ইউনূস বলেন।

 

RELATED ARTICLES
- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments