স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ায় শারদীয় দুর্গাপূজায় ৩য় বারের মতো কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহাষ্টমী তিথিতে শুক্রবার সকাল ১০টায় শাজাহানপুর উপজেলার গণ্ডগ্রাম শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রমে এই পূজার আয়োজন করা হয়। বগুড়ায় কুমারী পূজার জন্য মাতৃভাবের পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে এ বছর কুমারী মায়ের আসনে বসানো হয় ৮ বছর বয়সী নিভৃত মন্দির সাহাকে। কুমারীর বয়স ৮ বছর হওয়ায় উমা নামে পূজিত হন। পূজা কার্যক্রম পরিচালনা করেন আশ্রমের পুরোহিত বাসুদেব ব্যানার্জী।
নিভৃত মন্দির সাহা বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ২য় শ্রেনীর শিক্ষার্থী এবং শহরের বিশিষ্ঠ চিকিৎসক ডা: মিল্টন কুমার সাহা’র কন্যা। তিনি জানান, তার মেয়েকে মা হিসেবে পূজা করে পূরো নারী জাতিকে সম্মান দিতে পারছি যা নিশ্চয় সৌভাগ্য। হিন্দু শাস্ত্রমতে, কুমারী পূজার উদ্ভব হয় কোলাসুরকে বধের মধ্য দিয়ে। কোলাসুর এক সময় স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করায় বাকি বিপন্ন দেবগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হয়। সে সব দেবগণের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেবী কুমারী রূপে কোলাসুরকে বধ করেন। এরপর থেকে মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়।
পূজা দেখতে আসা অরুপ রতন জানান, মূলত নারী শক্তির জয় হোক, নারীরা তাদের প্রাপ্য সম্মান পাক আজ এই প্রার্থনা করি। তিনি বগুড়ায় কুমারী পূজা দেখে আনন্দিত।
বনশ্রী সাহা বলেন, গত তিন বছর ধরে এই আশ্রমে কুমারী পূজা হচ্ছে। জগত মাতার শুদ্ধতার প্রতিক হচ্ছেন কুমারী। স্বামী বিবেকানন্দন প্রথম কুমারী পূজা শুরু করেছিলেন। মানুষের মধ্যেই মা দুর্গা রয়েছেন, এই বোধটাকেই সাধারণ মানুষের প্রচার করার জন্য কুমারী পূজা শুরু করা হয়েছিলো।’
পুরোহিত উপস্থিত পূজার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কুমারী আদ্যাশক্তি মহামায়ার প্রতীক। দুর্গার আরেক নাম কুমারী। মুলত নারীকে যথাযথ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে কুমারী পূজা করা হয়। মাটির প্রতিমায় যে দেবীর পূজা করা হয়, তারই বাস্তব রুপ এই কুমারী পূজা।’
বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সুত্রে জানিয়েছে, বগুড়া জেলায় ১২টি উপজেলায় ৬৩০ মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে প্রশাসন ও মন্দির কমিটির পক্ষ ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। আগামী রবিবার বিজয়া দশমীর মাধ্যমে দুর্গোৎসব শেষ হবে।